জলাবদ্ধতা এখনো নিত্যসঙ্গী জুরাইনের আলমবাগ বাসীর
নিজস্ব প্রতিবেদক: আলমবাগ আর জলাবদ্ধতা যেন এক সূত্রে গাঁথা। কাঠফাটা রৌদ্রে অনাবৃষ্টির কারণে যখন বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকে জুরাইন – পোস্তগোলা বাসী তখন আলমবাগবাসী মনে-প্রাণে বৃষ্টি না আসার জন্য স্রষ্টার নিকট আকুতি জানায়। কারণ একটাই, এমনিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে রাস্তা-ঘাট, অলি-গলি সহ বাড়ি ঘরে পানি জমে থাকার কারণে যখন মানুষজনের ভোগান্তির শেষ নেই।
সেই পানি ঢুকে পড়েছে অনেকের বাসা-বাড়ি কিংবা দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। যাদের পাকা ঘর বা ভবন তারা ইটের গাঁথুনির মাধ্যমে ঘরে পানি প্রবেশে বাধ তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। সেখানে একবার যদি ঝুম বৃষ্টি নামে তাহলে আর রক্ষা নেই। ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ করে সব কিছু ভেসে যাবে।
বৃষ্টি ছাড়াই যেখানে পানির মধ্যে বাস সেখানে একবার বৃষ্টি হতে পারলে আর তাদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। একই সাথে আলমবাগে অবস্থিত বিভিন্ন কল-কারখানায় কেমিক্যালযুক্ত বিষাক্ত পানি ও পয়ঃ নিষ্কাশনের মলমূত্র মিশে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পানিবন্দী হাজার হাজার মানুষ। আর এর মূল কারণ পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা।
সরেজমিনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ডের আয়তাধীন আলমবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আলমবাগের হাজেরা স্কুল সংলগ্ন গলিটি বিষাক্ত নোংরা পানিতে ডুবে আছে। আশে পাশের গলিগুলোর একই অবস্থা। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই নোংরা পানি দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছে।
এলাকার মসজিদের মুসল্লিরা এই পথ দিয়েই নামাজের জন্য কাপড় উচু করে আসছে। রিকশা অটোসহ গাড়ি খুব ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে এবং নিচু এলাকার কারণে শুকনো মৌসুমে পানিবব্ধতা বলে মনে করেন স্থানীয়রা। এ পানি দিয়ে যাতায়াতের ফলে চর্মসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয়রা। অনেককে বাধ্য হয়েই দুই মিনিটের রাস্তা রিকশার মাধ্যমে ১৫-২০ টাকা খরচ করে পার হতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আসমা আক্তার জানান, এখানে পানি জমার জন্য বৃষ্টির প্রয়োজন হয় না। এখানে সব সময়ই পানি জমে থাকে। আর যদি একবার বৃষ্টি হয় তাহলে তাদের কষ্টের মাত্রা আরও বহুগুনে বেড়ে যায়। এখানকার কাউন্সিলর, সংসদ সদস্য জনপতিনিধিগণ সবাই বিষয়টি জানে। কিন্তু আমাদের সমস্যা দূর করার কোন ব্যবস্থাই হচ্ছে না।
এ সময় তিনি সামনের একটি বাড়ি দেখিয়ে বলেন, এই যে দেখেন, বাড়ির দরজার সামনে ইট দিয়ে গাঁথনি দিয়ে পানি আটকে রাখা হয়েছে। তা নাহলে ঘরের ভিতরেই পানি চলে যেত। আমাদের এই সমস্যা কবে নাগাদ সমাধান হবে তার উত্তর কেউ দিতে পারছেন না।
আরেক বাসিন্দা আসিফ জানান, এখানে আগে থেকেই পানিবদ্ধতার সমস্যা ছিল। কিন্তু গত দুই বছর আগে সিটি কর্পোরেশন বাইতুস সালাম মসজিদের পূর্বপাশ দিয়ে যাওয়া এই সড়কটি ড্রেন নির্মাণসহ সড়কটি উচু করে তৈরি করে।
এর ফলে এখানকার পানি সরানোর ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। উল্টো ড্রেনের পানিও এখানে দিয়ে বের হয়ে এখানকার পানির সাথে নোংরা ময়লা মিশে যায়। ফলে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।