নেপালে ৭২ আরোহী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত, ৬৮ দেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ | আপডেট: ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ,

নেপালের পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে ৭২ আরোহী নিয়ে একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। পোখারা থেকে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলো সেটি। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি টেক অফের ২০ মিনিটের মধ্যেই কাস্কি জেলার কাছে সেটি ভেঙে পড়ে।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকালে কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, পুরাতন বিমানবন্দর এবং পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে বিধ্বস্ত হওয়া ইয়েতি এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটিতে মোট ৬৮ জন যাত্রী এবং চার জন ক্রু ছিলেন।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৮টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইয়েতি এয়ারলাইন্স সংস্থার মুখপাত্র সুদর্শন বার্তোলা এএফপিকে বলেছেন, কেন উড়োজাহাজটি ভেঙে পড়ল, জানি না। কেউ জীবিত রয়েছেন কি না, তা-ও বলতে পারছি না। ভেঙে পড়া মাত্রই সেটিতে আগুন ধরে যায়। উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। আগুন নেভানোরও কাজ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, কারও বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ। বার্তোলার বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুরাতন বিমানবন্দর এবং পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে উড়োজাহাজটি রানওয়েতে বিধ্বস্ত হওয়ার সময় সেটিতে আগুন ধরে যায়। উদ্ধার তৎপরতা চলছে এবং বিমানবন্দর আপাতত বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা- এএনআই।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ছবি এবং ভিডিওতে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। স্থানীয় কর্মকর্তা গুরুদত্ত ঢকাল এ এফ পি কে বলেছেন, ধ্বংসাবশেষে আগুন লেগেছে এবং উদ্ধারকর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।

সরকার নিয়ন্ত্রিত নেপাল টেলিভিশন জানিয়েছে. দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট এআরটি এয়ারক্রাফটে যাত্রীদের মধ্যে দশ জন বিদেশি। বাকিরা স্থানীয়। তবে কোন কোন দেশের নাগরিক সেটি তাৎক্ষণিভাবে জানাতে পারেনি ইয়েতি এয়ারলাইন্স।

নেপালি সাংবাদিক দিলীপ থাপা এনডিটিভিকে বলেছেন, ধ্বংসাবশেষে আগুনের কারণে উদ্ধার অভিযান কঠিন হয়ে পড়েছে। উদ্ধার অভিযানে আরও বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হচ্ছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহল মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

নেপালের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করে। পোখারা বিমানবন্দরে অবতরণের কাছাকাছি সময়ে সেটি নদীর তীরে বিধ্বস্ত হয়। টেক-অফের প্রায় ২০ মিনিট পরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিলো। ধারণা করা হয়েছিলো যে উড়োজাহাজটি হয়তো নামতে পারে। দুই শহরের মধ্যে ফ্লাইট সময় ২৫ মিনিট।

উল্লেখ্য, নেপালের এয়ারলাইন ব্যবসার নিরাপত্তা এবং কর্মীদের অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে গোটা বিশ্বে। এর আগেও নেপালে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় শতশত মানুষ মারা গেছে। সবশেষে গত মে মাসে নেপালি ক্যারিয়ার তারা এয়ারের একটি ফ্লাইটে থাকা ২২ জনের সবাই বিধ্বস্ত হবার সময় মারা গিয়েছিলো।

২০১৮ সালের মার্চ মাসে কাঠমান্ডুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে ৫১ জন নিহত হয়। ১৯৯২ সালের পর সেই দুর্ঘটনাটি নেপালের সবচেয়ে ভয়াবহ ছিলো। ওই বছর কাঠমান্ডুতে যাওয়ার সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে ১৬৭ জন যাত্রীর সবাই মারা যায়।



একটি মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা আছে *