হিজড়া সেজে চাঁদাবাজি, নারী সেজে সর্বস্ব লুট!

প্রকাশিত: ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩ | আপডেট: ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ,

হিজড়া সেজে চাঁদাবাজি, নারী সেজে সর্বস্ব লুট!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘরে স্ত্রী-সন্তান রয়েছে, অথচ হিজড়া সেজে দিনের বেলা ঘুরে ঘুরে চলে চাঁদাবাজি। আর রাতের বেলায় মানুষজনকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়সহ সর্বস্ব লুট করাই তাদের পেশা।

 

এই চক্রের হোতা সোহাগ মিয়া ওরফে সজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনিসহ (৩২) ছয় সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

 

গ্রেফতার অন্যরা হলেন- নাছির (৪২), আমানুর মন্ডল (৪২), রাজু (২৬), আব্দুর রহমান (৩৬) ও হৃদয় মিয়া (২২)।

 

ডিবি জানায়, চক্রের হোতা সোহাগ মিয়া দুই সন্তানের জনক। অথচ হিজড়ার বেশ ধারণ করে শুধু চাঁদাবাজিই নয়, অপহরণ করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এসব তথ্য জানান ডিবি ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন।

 

তিনি বলেন, গত ২৩ জানুয়ারি বিকেলে রাজধানীর মুন্সি আব্দুর রব কলেজের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী (১৬) কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় হিজড়ার খপ্পরে পড়েন। নারীবেশে কয়েকজন তাকে যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মেসে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে তার কাছ থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা আদায় করা হয়।

 

এ ঘটনায় ৯ ফেব্রুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর ভাই। এর ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

 

ডিবি জানায়, চক্রটির প্রধান কাজল ওরফে সজনি হিজড়া তার আসল নাম সোহাগ মিয়া। তিনি দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকায় স্ত্রী ও ২ সন্তানসহ বসবাস করেন। মূলত প্রতারণা করতেই তিনি হিজড়াদের চালচলন রপ্ত করেন।

 

এ কাজে তিনি এতটাই পারদর্শী যে, হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরাও তাকে নিয়ে কোনো সন্দেহ করতেন না। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি ছিনতাই ও অপহরণের একটি চক্র গড়ে তোলেন। হিজড়া জনগোষ্ঠীতে তিনি কাজল, সজন, সজনি নামেও পরিচিত।

 

ডিসি আশরাফ হোসেন আরও বলেন, রাজধানীতে ৯০ শতাংশই নকল হিজড়া। তারা শুধু রাস্তায় বা বাসায় চাঁদাবাজি নয়, অপহরণের মাধ্যমেও হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

 

প্রতি মাসে সোহাগের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫টি অপহরণ ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসব টাকা তিনি যাত্রাবাড়ী এলাকায় রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নিম্নবিত্ত মানুষকে উচ্চহারে সুদে ঋণ দিতেন সোহাগ।

 

সোহাগের নেতৃত্বাধীন চক্রটি মূলত যাত্রাবাড়ী ও আশপাশের এলাকায় ছিনতাই ও অপহরণ করে থাকে। চক্রটি প্রায় ৬ বছর ধরে একেক দিন একেক এলাকায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা



একটি মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা আছে *