জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদার: ৪০ হাজার বডিক্যাম কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৪০ হাজার বডি-ওর্ন ক্যামেরা (বডিক্যাম) কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, “বডি ক্যামেরা কেনার প্রক্রিয়া আগামীকাল বা পরশুর মধ্যেই সম্পন্ন হবে।”
বডি-ওর্ন ক্যামেরা বা বডিক্যাম একটি পরিধানযোগ্য অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইস, যা সাধারণত পুলিশের পোশাক বা হেলমেটে সংযুক্ত থাকে। এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকাণ্ড নথিবদ্ধ করা, প্রমাণ সংগ্রহ এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পুলিশের বডিক্যামে ধারণ করা ফুটেজ অভিযোগ প্রতিরোধ ও নিষ্পত্তি, পুলিশের আচরণ মূল্যায়ন এবং অপরাধ তদন্তে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রে সম্ভাব্য সংঘাত, বিশৃঙ্খলা বা অনিয়মের ঘটনায় এসব ফুটেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি (এসিসিইএ) আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য প্রায় ৪০ হাজার বডিক্যাম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর মাধ্যমে এ ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
বৈঠক শেষে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “জাতীয় নির্বাচনে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডিক্যাম দেওয়া হবে। এ ক্রয় প্রস্তাব ইতোমধ্যে অনুমোদিত হয়েছে, দ্রুতই সেগুলো আনা হবে।”
সরকার জানায়, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু বডিক্যাম কেনা নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে সারাদেশের ভোটকেন্দ্রগুলো ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিতের একটি বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রস্তুত করেছে সরকার। সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ, ৫ লাখ ৫০ হাজার আনসার সদস্য, ৩০ হাজারের বেশি বিজিবি সদস্য এবং প্রায় ১ লাখ সেনা সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
সরকারের আশা, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।
সূত্র: বাসস