ডাকসু নির্বাচনে চাকমা প্রার্থীদের আদিবাসী প্রচারণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: 12:08 pm, September 8, 2025 | আপডেট: 12:08 pm,

ডাকসু নির্বাচনে চাকমা প্রার্থীদের আদিবাসী প্রচারণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডাকসু নির্বাচনে রাষ্ট্রদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রচারণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে সার্বভৌমত্ব সচেতন ছাত্রসমাজ। আজ রোববার বিকেল ৪টায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্নের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশী এনজিও ও ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে ঢাবিতে ‘আদিবাসী বিচ্ছিন্নতাবাদ’ প্রচারণা ও কায়েম করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ‘আদিবাসী’ প্রচারণার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে কথিত ‘জুম্মল্যান্ড’ কিংবা ভারতের সাথে যুক্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র বিদ্যমান। এ নির্বাচনে রাষ্ট্রবিরোধী ‘আদিবাসী বিচ্ছিন্নতাবাদ’ প্রচারকারীদের প্রার্থিতা ও ছাত্রত্ব বাতিল এবং শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।

 

ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক বলেন, যেসব ক্যান্ডিডেট ঢাবিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আদিবাসী প্রচারণা চালাচ্ছে, তাদেরকে ডাকসু নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত করে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা এবং রাষ্ট্রদ্রোহী শব্দ প্রচারণার অভিযোগে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। কিন্তু এই ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীরবতা আমাদের হতাশ করেছে। আদিবাসী প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের অখণ্ডতা নিয়ে যে ঝুঁকি তৈরী হবে; এর জন্য ঢাবি প্রশাসনও দায়ী থাকবে।

 

বাংলাদেশের প্রায় ৯৯ শতাংশের বেশি মানুষ বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী। এর বাইরে আনুমানিক ০.৫০ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। এখানে কেউ শাক, কেউ মারমা, কেউ খুমি, কেউ বম, কেউ তঞ্চগ্যা জাতি ইত্যাদি। এগুলো আমাদের জাতিগত পরিচয়। সামষ্টিকভাবে বাঙ্গালি-অবাঙ্গালি/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আমরা সবাই বাংলাদেশী। কিন্তু নিজ জাতি ও বাংলাদেশী পরিচয় বাদ দিয়ে বিদেশী এনজিও ও ভারতীয় চাহিদায় বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘আদিবাসী’ প্রচারণা রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ড। এদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

তিনি বলেন, গত আওয়ামী স্বৈরাচার আমলে ঢাবির ছাত্রলীগ ও বামপন্থী ছাত্রদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলতো যে, ঢাবি ক্যাম্পাসে কে বেশি ভারতীয় হেজিমনি (আধিপত্য) তৈরী করতে পারে। এটা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি পর্যন্ত হয়েছে। ভারতীয় হেজিমনির পোদবালক ঢাবির জগন্নাথ হলের মেঘমল্লার বসু। স্বৈরাচার পতনের পরেও তারা ঢাবিতে ভারতীয় হেজিমনি ‘আদিবাসী বিচ্ছিন্নতাবাদ’ পুনরায় নিয়ে আসার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে- দশম বর্ষী আদু ভাই ওরফে ভারতরুপি মেঘমল্লার ও আদিবাসী দাবিকারী চাকমাদের রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যকে সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া এবং তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ন্যস্ত করা।

 

তিনি আরো বলেন, ডাকসু নির্বাচনে পাহাড়ের সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আঞ্চলিক সংগঠনের ফান্ডিং ও কানেকশনের ছড়াছড়িও দেখা যাচ্ছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী প্রার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনই উক্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হিসেবে অভিযুক্ত। এই ব্যাপারগুলোতে ঢাবি প্রশাসনের যাচাইহীনতা ও নিষ্ক্রিয়তা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র কিংবা শিক্ষক যারাই রাষ্ট্রদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রচারণা চালাবে, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমরা জোর দাবী জানাচ্ছি।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক, রেজাউল করিম, পাইশিখই মারমা, সাদ্দাম হোসেন, সৌরভ প্রমুখ।



একটি মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা আছে *