ঢাকা-৪ এ নৌকা প্রত্যাশীদের জোরালো দাবি নৌকা চাই
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে শ্যামপুর -কদমতলীর রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে নেতা কর্মীদের নিয়ে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল মাঠে নেমেছেন। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটানোর জন্য ২০২২ সনের ডিসেম্বর থেকে ১০ দফা দাবী জানিয়ে যুগপুৎ আন্দোলন করে যাচ্ছের বিএনপি। অপর দিকে সরকারি দল বিএনপির আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য ধারাবাহিকভাবে রাজপথে নেমে শান্তি সমাবেশ করছে । রাজনীতির মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। দুই দলের নেতারাই একে অপরকে খোঁবা মেরে বক্তব্য রাখছেন। আর এ নিয়ে রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মাঝেও ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।
এদিকে আগামী নির্বাচন ঘিরে গত দুই বারের চেয়ে ভিন্ন কৌশলে নেমেছে ক্ষমতাসীন দল। একই সাথে এবার এক বছর আগে থেকে আওয়ামী লীগ প্রচারনায় নেমেছে। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগের এমপিদের মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের কারা মনোনয়ন পাবে তাদের বাছাই কার্যক্রম শুরু করছে বলে সূত্র জানান। এই বাছাই কার্যক্রমে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট লক্ষ্য করে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে।
দলীয় সূত্রমতে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নৌকার প্রার্থী বাছাইয়ে মাঠ জরিপের কাজ চলমান রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মাঠ জরিপের কাজ মনিটরিং করছেন আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় নির্বাচনে যারা নৌকার বিরোধিতাকারী, বিতর্কিত, জনবিচ্ছিন্ন, গ্রুপিংবাজ সেই সব সংসদ সদস্যরা দ্বাদশের নির্বাচনে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। এছাড়া বিতর্কিত – জনবিচ্ছিন্ন এমপিদের কপাল পুড়বে বলে মনে করছে দলীয় নীতি-নির্ধারণী সূত্র।
অপরদিকে ঢাকা-৪ আসনে নৌকার দাবী জানিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা কর্মীরা। বিশেষ করে ২০১৮ সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এ আসনে নৌকার জন্য জোরলো ভাবে দাবী জানিয়ে আসছে। ইউনিট আওয়ামী লীগের সম্মেলন সহ বিভিন্ন সময়ে এ অঞ্চলের বিভিন্ন সভা-সমাবেশ আগত কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে তাদের এই দাবী আরও জোরালো ভাবে উপস্থাপন করা হয়। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় নেতারা আশ্বস্ত করেন। এছাড়া এবার জাতীয় পার্টির সাথে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শরীক নেই। আর এতে করে জাতীয় পার্টির এমপির কপাল পুড়তে পারে।
ঢাকা-৪ আসনে আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বেকায়দায় পরতে পারে বলে মনে করেন সচেতন মহল। কেননা ঢাকা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির থেকে লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। অপরদিকে ঢাকা-৬ আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন। তাদের এই দুই আসন আওয়ামী লীগের প্রার্থী দাবী জানিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও ঢাকা -৪ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ছাত্রলীগের ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে ঢাকা-৪ আসনে নৌকার দাবী তুলেছেন। শান্তি সমাবেশ সহ বিভিন্ন সভার সমাবেশ গুলোতেও তিনি একই দাবি বহুবার তুলেছেন। পাশাপাশি তারা লাঙ্গলের উপর ভর করে আর টিকে থাকতে চান না। সেই সাথে তিনি এখানে প্রার্থী হতে চেয়ে এলাকা জুড়ে ব্যানার ফেস্টুন টানিয়েছেন। শেখ হাসিনার সাবেক একান্ত সচিব আওলাদ হোসেন প্রতিনিয়ত ওয়ার্ড ও কেন্দ্র ভিত্তিক সভা-সমাবেশ করছেন। এ আলোচনা সভাগুলোতে তিনি ঢাকা-৪ এ নৌকার প্রার্থীতার জোর দাবি জানান। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শেখ মোঃ আজহার বিভিন্ন সভা-সমাবেশও এলাকায় নৌকা প্রতীকের জোরালো এ দাবি জানান।
দলীয় সূত্রমতে, ঢাকা-৪ আসনে নৌকার মনোনয়নের জন্য আগামী নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শেখ মোঃ আজহার, আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য এড. সানজিদা খানম, শেখ হাসিনার সাবেক একান্ত সচিব ড.আওলাদ হোসেনের নাম উঠে এসেছে। এ ছাড়াও মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. মোঃ জগলুল কবিরও পিছিয়ে নেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে আগামী নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ। এখানে যাদের জনপ্রিয়তা বেশি এবং গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট যাদের ভালো, মনোনয়নে তারা প্রাধান্য পাবে। আর এই ক্ষেত্রে ঢাকা-৪ এ আওয়ামী লীগের কে মনোনয়ন পাবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে এ আসনে এক ঝাক নেতৃবৃন্দ প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা মাঠে ময়দানে কর্মীদের সক্রিয় রেখে যাচ্ছেন। তফসিল ঘোষনা হলে পরিস্কার হবে এখানে কে নৌকার মনোনয়ন পাচ্ছেন। কিন্তু সবাই সুযোগ চায়। আর এ জন্য আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা দলীয় সভা নেত্রীর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।