ভিশন স্পেশালাইজড হাসপাতালে হাতের অস্ত্রোপচারে যুবকের মৃত্যু
হীমেল কুমার মিত্র: রংপুর মহানগরীর ভিশন স্পেশালাইজড একটি বেসরকারি হাসপাতালে হাতের অপারেশন পর ১ জন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজন ও পরিবার।
মৃত হায়দার আলী এক কন্যা সন্তানের জনক। তিনি শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করার পাশাপাশি বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন।
পরিবারের দাবি, অপারেশন পরবর্তী ভুল ওষুধ সেবনের কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। (২৩ মে) মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্ত এবং স্বজনদের বরাতে রংপুর মেট্রোপলিটন থানার ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান জানান, গত ২১ মে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বাম হাত জখম হওয়া লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার ফজলুল হকের ছেলে হায়দার আলী (২৭) অসুস্থ অবস্থায় রংপুর শহরের ধাপ এলাকার ভিশন স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন ডা. এমএম হক মাহফিল তার হাতে অপারেশন করার রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মঙ্গলবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় রক্ত দেওয়ার পর হায়দার আলী মারা যান। এ ঘটনায় স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আটকে রাখে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্বজনরা এখনও মরদেহ নিয়ে যাননি। তারা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ঘিরে রাখলে হাসপাতালের পরিচালক কামরুজ্জামান বাইরে থেকে নিজের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন। সেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত হলে কৌশলে পালানোর চেষ্টা করেন। গণমাধ্যমকর্মীরা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে নিজের পরিচয় আড়াল করে বলেন, আমি হাসপাতালের কেউ না। এখানে দেখতে এসেছি।
পরে বাধ্য হয়ে নিজের পরিচয় স্বীকার করে তিনি বলেন, ঘটনাটি কী হয়েছে আমার জানা নেই।
নিহত হায়দার আলীর বাবা ফজলুল হক জানান, এই হাসপাতালে ৪০ হাজার টাকায় আমার ছেলের অপারেশনের চুক্তি হয়। আমরা টাকাও দিয়েছি। কিন্তু অপারেশনের পর আমার ছেলের অবস্থা অবনতি হয় এবং মারা যায়। আমার ছেলের বাম হাতের পেশির কাছে হাড্ডি ভেঙে যায়। তাহলে সেটা যদি কেটেও ফেলা হত তাতেও কী মানুষ মারা যায়? আমি চাই, আমার ছেলেকে যারা অপারেশনের নামে হত্যা করেছে, তাদের বিচার হোক।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন থানার ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান জানান, নিহতের পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।