রংপুরে লাইসেন্সবিহীন করাত কলে সয়লাব
মোঃ হামিদুর রহমান লিমন, ক্রাইম রিপোর্টারঃ
সরকারের অনুমোদন ছাড়াই রংপুর সদর উপজেলায় প্রায় অর্ধশত করাত কল (স’মিল) চলছে নিজস্ব নিয়মে। হরিদেবপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে হরকলি এলাকায় জনবহুল একটি সড়কের পাশে ডিজেল চালিত একটি করাতকল স্থাপন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ন এই করাত কলটির কাগজপত্রের বালাই নেই। গত বছর হরিদেবপুর পানবাজার এলাকায় করাত কলে কাটা পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। তারপরও সর্তকতার কোন ব্যবস্থা নেই করাতকল গুলোতে। অদক্ষ শ্রমিক কিংবা পরিবারের যে কোন সদস্য অথবা পিতা পুত্র মিলে চালাচ্ছে এই করাতকল গুলো। ব্যস্ত বিভিন্ন সড়ক ঘেঁষে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে করাতকল। এ কারণে যানবাহনের চালক, যাত্রীসহ পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চোরাই কাঠ ও বন বিভাগের গাছ রাতের আঁধারে কেটে এনে রাতেই ফারাই করা হচ্ছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে সামাজিক বনবিভাগের। অথচ ১৯৯৮ সালের করাতকল (লাইসেন্স) বিধিমালা অনুযায়ী, করাতকল স্থাপনে বন বিভাগে আবেদন করতে হবে। জনবসতিপ‚র্ণ এলাকা ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন জায়গায় করাতকল স্থাপন করা যাবে না। রংপুর বন বিভাগ স‚ত্রে জানা গেছে, জেলার আট উপজেলায় ৪শত ৭৫টি করাতকল রয়েছে। রংপুর সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন এবং সিটি কর্পোরেশন মিলে ৭৯টি করাত কল রয়েছে। এরমধ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত মাত্র ১৩টি করাত কল। লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। হরকলি টু পাগলাপীর রোডে চলাচলকারী এক স্কুলশিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাস্তা দিয়ে চলার সময় বাতাসে কাঠের গুঁড়া উড়ে চোখে এসে পড়ে। দিনরাত করাতকলে কাজ চলায় কাঠের গুঁড়া বাতাসে উড়ে চলন্ত যানবাহনের চালক, ছাত্র-ছাত্রী ও পথচারীদের চোখে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। সেই সঙ্গে সড়ক ঘেঁষে করাতকলগুলোর কাঠ ও গাছের গুঁড়ি রাখায় সড়কগুলোও সংকুচিত হয়ে পড়ছে। চক্ষু বিশেষজ্ঞ এম এ সাত্তার বলেন, কণাজাতীয় কাঠের এই গুঁড়া চোখের রেটিনার মারাত্মক ক্ষতি করে। এতে চোখ নষ্ট পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। জনগণের দাবি, স্থানীয় প্রশাসনের উচিত এসব করাতকল উচ্ছেদে করা। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাইম হাসান খান বলেন, বন বিভাগের কাছে অবৈধ করাতকলের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পাওয়া গেলে উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।