শেখ হাসিনার মুক্তির দাবীতে ২৫ লাখ গণস্বাক্ষর জমা ও প্রাসঙ্গিক ঘটনা
১/১১ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কাল, গন মানুষের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কারাভোগ-সাহসী ভূমিকা, সফল নেতৃত্ব- দলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সম্মিলন। ১/১১এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অবৈধ ফরমান জারির পূর্ব মুহূর্তে সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ৩/এ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অন্যান্য হাতে গুনা ক’জন নেতার অনুষ্ঠিত বৈঠকে আমার উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিস। আতঙ্ক আর উৎকন্ঠার মধ্যে বৈঠক শেষে প্রিয় নেত্রী আমাদের কে সাবধানতার সাথে যার যার অবস্থানে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেছিলেন। এর পর থেকেই সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অবৈধ শাসনের প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন-গ্রেফতার শুরু করা হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সাহসী- প্রতিবাদী ভূমিকায় দলের অতীতের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা কর্মীদের সম্মিলন খুব কাছে থেকে দেখার এবং অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল । তখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পরামর্শে এবং শ্রদ্ধেয় নেত্রী গ্রেফতার পরবর্তীতে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শ্রদ্ধা ভাজন নেতা জিল্লুর রহমান সহ অন্যান্য কয়েকজন নেতা-নেত্রীর সাথে কাজ করার দিনগুলো মনে পড়ে। সেনা সমর্থিত শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে সুবিধাভোগী অনেককেই তখন পাওয়া যায়নি- বিপরীতে চরম বাধা-ষড়যন্ত্রের মোকাবিলার সম্মূর্খীন হতে হয়েছে। চরম দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষে অবলম্বন করতে গিয়ে আমাদের অনেককেই জেল জলুম- মামলা, নির্যাতন, হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে ১/১১এ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চাপের ভয়ে বা যে কারনেই হউক আমাদের দলের অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ নেতারাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাহীন হয়ে ক্ষমতার লোভে যাওয়া শেষ পর্যায়ে ব্যর্থ পথ পরিহার করে নীজেদের রক্ষা করেছিলে। এর পরও গণ মানুষের নেত্রী শেখ হাসিনা এদের অনেককে মন্ত্রী,এমপি পদে মনোনীত করেছিলেন। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অবৈধ শাসনের বিরুদ্ধে দেশবাসীর পক্ষে প্রতিবাদের মুলকান্ডারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে যে ক’জন বিশেষ ভুমিকা রেখেছিলেন তাদের মধ্যে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব মোঃ জিল্লুর রহমান এবং তাঁর সাথে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, অগ্নীকন্যা বেগম মতিয়া চৌধুরী, এডভোকেট সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ নাসিম ও ওবায়দুল কাদের (পরে গ্রেফতার), আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, এডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডাঃ দিপু মনি, ডঃ হাছান মাহমুদ, ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ বি তাজুল ইসলাম সহ অন্যান্য- (সবার নাম উল্লেখ করতে না পারায় ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে খুশী হবো)। সংসদ ভবনে স্থাপিত কারাগারে আটক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে গনমাধ্যম টিভি-প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে পৃথক পৃথক সাক্ষাত নেওয়ার জন্য অনেক নেতাদের অফিস-বাসায় ধর্না দিয়ে রাজি করার সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতার সম্মূর্খীন হতে হয়েছে। উল্লেখ্য-জাতীয় সংসদ ৪ নং ন্যাম ভবনে বসবাসরতঃ সাবেক স্পীকার এডভোকেট আব্দুল হামিদ (বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি) মিডিয়ায় সাক্ষাতে কারাগারে আটক জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছিলেন। তাছাড়া ত্যাগী নেতা কর্মীদের সহযোগিতায় আমরা জননেত্রীর মুক্তির দাবীতে পঁচিশ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে ( বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়) ২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল জমা প্রদানে অংশ গ্রহণ করেছিলাম। নেতা কর্মীদের অব্যাহত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মূখে দীর্ঘ এগারো মাস কারাভোগের পর আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা আজকের দিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। কারাগারে আটক থাকাকলীন গুরুতর অসুস্থ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র- আমেরিকা গিয়েছিলেন। চিকিৎসা শেষে গণ মানুষের নেত্রী দেশে ফেরা কালীন বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন । শত বাঁধা ও প্রাণনাশের হুমকি উপেক্ষা করে আমেরিকা থেকে দেশে ফেরার পথে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাধায় মূখে লন্ডনে অবস্থান শেষে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন। ঐদিন জননেত্রীর আগমনে এয়ারপোর্ট থেকে ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত লাখ লাখ নেতা কর্মীদের স্বর্তঃস্ফুর্ত উপস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভীত হয়ে পড়েছিলেন। বাধা-ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই সফল নেতৃত্ব দিয়েই এগিয়ে চলেছেন আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
লেখকঃ এম এ করিম
সাবেক সহ সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
কেন্দ্রীয় উপ কমিটি
জয় বাংলা- জয় বঙ্গবন্ধু