৭নং গৌরীপুর ইউনিয়নে ঈদ উপলক্ষে গরিব মানুষের মাঝে বিতরণের চাউল স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য মুন্নি আক্তারের বিরুদ্ধে


নিজস্ব প্রতিবেদক: পিরোজপুর ভান্ডারিয়া ৭ নং গৌরীপুর ইউনিয়নে ঈদ উপলক্ষে গরিব অসহায় মানুষের মাঝে সরকারি ভাবে বরাদ্দকৃত ১০ কেজি চাউল স্বজন প্রীতির আলোচনায় এসেছেন ৪-৫-৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার মুন্নি আক্তার।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, গৌরীপুর ইউনিয়নে একটি করে ওয়ার্ডে জনসাধারণের মাঝে বিতরণ করার জন্য ১১৭ টি কার্ড বরাদ্দ হয়েছে। সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী ৬ নং ওয়ার্ডের এই ১১৭ টি কার্ড বরাদ্দের সভাপতি করা হয়েছে মহিলা মেম্বার মুন্নি আক্তার কে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান মেম্বারদের জন্য আলাদাভাবে চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবুও মুন্নি আক্তার ১১৭টি কার্ড থেকে ৩০টি কার্ড ব্যক্তিগত দাবী করে আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু এলাকাবাসীর উপস্থিতি সমিতির হাটে জাতীয়তাবাদী বিএনপির ওয়ার্ড কার্যালয়ে বসে দলমত নির্বিশেষে এলাকার গরীব অসহায় মানুষকদের মাঝে ১১৭ টি কার্ড বরাদ্দ করা হয়।
এ সময় বিএনপি, জামায়াত ও চরমোনাইয়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সোহেল আকন ও সেলিম চৌকিদার উপস্থিত ছিলেন।
তাদের সকলের মতামত অনুযায়ী ১১৭ টি কার্ড ধার্য করা হয়েছিল কিন্তু ১১৭টি কার্ড ধার্যকারী ব্যক্তিরা ইউনিয়ন পরিষদে চাউল আনতে গিয়ে ৪০ থেকে ৪৫ জন লোক প্রতারিত হয় ।
তাদের অভিযোগ, তাদের নাম কেটে ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার মুন্নি আক্তার তার নিজস্ব লোকদেরকে কার্ড বিতরণ করেছেন। এ ব্যাপারে ক্ষুদ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রতারিত ব্যক্তিরা।
ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি জাহাঙ্গীর কাজী, ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা বিএনপি’র নেতাদেরকে জানান তারা।
এ সময় উপজেলা যুবদলের পক্ষ থেকে রেজবী হৃদয় শামীম কে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি জাহাঙ্গীর কাজী ও শামিম এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের কাছে জানতে চাইলে সে বলে, এ ব্যাপারে মুন্নি আক্তারের সাথে কথা বলেন, যা কিছু করার সে করেছে।
উপজেলা যুবদল কর্মী রেজভী হৃদয় শামিম মহিলা মেম্বার মুন্নি আক্তারের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তার সাথে থাকা নিষিদ্ধ ঘোষিত ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা এবং জুলাইয়ের ছাত্র হত্যার আসামি, মুন্নি আক্তারের স্বামী আব্বাস মীর যুবদল কর্মী রেজবি হৃদয় শামীমের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ভাষায় বিএনপি সহ, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং ভান্ডারিয়া বিএনপি’র কে আছে তাকে নিয়ে আসতে বলেন।
সে আরো বলেন, আমার বাড়ির উপর দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকতে হয়। আমরা যেভাবে চালাবো সেভাবেই ইউনিয়ন পরিষদ চলবে আওয়ামী লীগের আমলে আমরা চালিয়েছি বিএনপির আমলেও আমরাই চালাবো।
একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি হলে বাঁশের লাঠি দিয়ে রেজবি হৃদয় শামীমের গায়ে আঘাত করা হয়। সেখানে উপস্থিত কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা শামীমকে কিল ঘুষি মেরে বিভিন্ন স্থানে লীলাফুলা করে। এ সময় রেজবি হৃদয় শামীমের গলায় থাকা একটি ৮ আনা ওজনের স্বর্ণে চেইন বর্তমান বাজারে যার মূল্য ৭০ হাজার টাকা এবং তার সাথে থাকা ব্যবহারের স্যামসাং s24 আলট্র্যা এবং ওয়ালটন নেক্সজি N25 মোবাইল ২টি যাহার বাজার মূল্য এক লক্ষ দশ হাজার টাকা, তারা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ সময় ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি জাহাঙ্গীর কাজী প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়। কোনভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসতে সক্ষম হয় তারা।
এ ব্যাপারে ভান্ডারিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন রেজবি হৃদয় শামীম।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, মুন্নি আক্তারের স্বামী আব্বাস মীর মাদকাসক্ত এবং সে একজন মাদক কারবারি। ভান্ডারিয়া থানায় তার নামে মাদকের মামলা রয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলেও প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করেছে এ যুবলীগ কর্মী।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান চৌধুরীর সাথে কথা বলতে চাইলে সে মুঠোফোনটি রিসিভ করেননি।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী বলেন, রেজবি হৃদয় শামীম জনস্বার্থে গিয়ে ওখানে লাঞ্চিত হয়েছে। আমাদের ন্যায্য পণ্য আদায় করতে যেয়ে সে মারধরের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই এবং ৪-৫-৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুন্নি আক্তারের অপসারণ চাই।