সিরাজদিখানে ডলার বাণিজ্যের নামে প্রতারণা: ভুক্তভোগী সর্বস্বান্ত, অভিযানে পুলিশ


দেবব্রত দাস দেবু, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে বিদেশি মুদ্রা দেওয়ার প্রলোভনে স্থানীয় দুই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ এক প্রতারকচক্র। প্রতারণার শিকার আশরাফুল আলম শেখ ও তার সহযোগী মোঃ মনির হোসেন ইতোমধ্যেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য বিশেষ অভিযান চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকান ডলারের চালান আছে বলে এলাকায় গোপনে প্রচার চালিয়ে আসছিল। প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তারা হাতে গোনা কয়েকটি আসল ডলার দেখায়। এরপর অল্প দামে বেশি ডলার সরবরাহের প্রলোভন দিয়ে টার্গেট ব্যক্তিদের জালে ফাঁসায়।
অভিযোগ অনুযায়ী, ভুক্তভোগীরা প্রতারকদের প্রলোভনে পড়ে নগদ অর্থ এবং বিকাশের মাধ্যমে ধাপে ধাপে মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর থেকে প্রতারকরা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় এবং তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কুড়িগ্রাম জেলার ভুরঙ্গমারী থানার ভুড়িমারি গ্রামের আজাহার শেখের ছেলে খালেক শেখ, তার সহযোগী মোসলেম ও কামাল হোসেন এই প্রতারণার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। পরিকল্পিতভাবে তারা সিরাজদিখানের ভুক্তভোগীদের কুড়িগ্রামের সোনাহাট ডিগ্রি কলেজ গেইটে ডেকে নিয়ে গিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। ঘটনাস্থল ছিল একটি স্থানীয় দোকানঘর, যেখানে তাদের বসিয়ে রেখে প্রতারকরা কৌশলে পালিয়ে যায়।
প্রতারিত ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম শেখ বলেন, আমরা বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম। খালেক শেখ বলেছিল তার বোনের কাছে দুই ব্যাগ ভর্তি ডলার আছে। তারা গরীব হওয়ায় বিক্রি করতে পারছে না। কিন্তু আসলে সবকিছু ছিল সাজানো নাটক। আমরা সর্বস্বান্ত হয়েছি।
সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর বলেন, এটি একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। খুব দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রতারণার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, ডলার বা স্বর্ণের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা এখন গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে। আর্থিক অজ্ঞতা ও দ্রুত লাভের আশায় মানুষ এই ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছে। তারা পুলিশকে এ ধরনের প্রতারকচক্র চিহ্নিত করে স্থায়ীভাবে নির্মূলের আহ্বান জানিয়েছেন।
তদন্তে জানা গেছে, প্রতারক খালেক শেখ দীর্ঘদিন সিরাজদিখান এলাকায় ভুক্তভোগীর বন্ধু মনির হোসেনের বাড়িতে কেয়ারটেকারের দায়িত্বে ছিলেন। ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগ নিয়েই তিনি এই প্রতারণার ফাঁদ পেতে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।