১২ মাসেই মাছ মারছি নদীত, এলা পানিও নাই মাছও নাই’: ধরণী কান্ত দাস
হীমেল কুমার মিত্র: হামার বাপ-দাদার আমল থাকি এই মাছ ধরার কাজ করি আসতোছি। আগোত নদীত শোগসময় পানি আসছো। ১২ মাসেই মাছ মারছি নদীত, এলা (এখন) পানিও নাই মাছও নাই।’
কথাগুলো বলছিলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের গোডাউনের হাট এলাকার জেলেপল্লির বাসিন্দা ধরণী কান্ত দাস (৬৬)। স্ত্রী-সন্তানসহ তাঁর পাঁচজনের সংসার চলে মাছ ধরে। কিন্তু তিস্তা নদীতে ঠিকমতো মাছ না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
ধরণী কান্ত বলেন, ‘দুইটা ছইলোক নিয়া নদীর অল্প পানিত মাছ মারিয়া আধা কেজি মাছ পাছি। এই মাছ বিক্রি করি চাউল কিনছি। আগোত মাছ খাওয়া হইতো, বিক্রিও হইতো। এখন সেই দিন নাই। দুইটা ছইল মাছ ধরে। কোনো দিন মাছ পায়, কোনো দিন পায় না। পাইলেও খাওয়া হয় না।
রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও বদরগঞ্জ উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তার বুক জুড়ে একসময় পানি থই থই করত। জেলেরা নদীতে মাছ ধরে দিনরাত ব্যস্ত থাকতেন। সেই খরস্রোতা নদীতে এখন কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরসমান। হেঁটে নদী পার হচ্ছেন মানুষ, পার হয় গরু-মহিষের গাড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা নদীর উজানে ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করায় একসময়ের খরস্রোতা তিস্তায় এখন পানি থাকে না। এখন পানি না থাকায় অধিকাংশ সময় জেলেদের বসে থাকতে হয়। শুধু বর্ষা মৌসুমের পানিতে অল্প কয়েক দিন মাছ ধরতে পারেন বলে জেলেরা জানিয়েছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান মানিক জানান, রংপুরে নদী, বিল ও মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ১৩ হাজার জেলে। রংপুরে কর্মহীন জেলেদের জন্য বরাদ্দ না থাকায় অর্থসহায়তা প্রদান করা সম্ভব হয় না।