এ আরও, তদারককারি কর্মকর্তা ও ডিলাররাই খাচ্ছে ওএমএস এর চাল আটা


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঢাকা মহানগরে দৈনিক দোকানের মাধ্যমে ১১৮ টি স্থানে ও ট্রাকের মাধ্যমে ৭০ টি মোট ১৮৮ স্থানে ওএমএস এর চাল ও আটা বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এতে প্রতিদিন ১৮৮ টন চাল ও ৩৩৭ টন আটা সর্বমোট ৫২৫ টন খাদ্য ঢাকায় বসবাস করা ২ কোটি মানুষের মধ্যে যারা নিম্ম ও নিম্ম মধ্য আয়ের মানুষ তাদের জন্য সরকারের একটি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী। অর্থ্যাৎ ঢাকায় বসবাসকারী এক চতুর্থাংশ নিম্ম ও নিম্ম মধ্য আয়ের ৫০ লক্ষ মানুষের জন্য ৫ লাখ ২৫ হাজার কেজি চাল ও আটা প্রতিদিনের বরাদ্ধ। যা তারা বাজার মূল্য থেকে কম মূল্যে কিনতে পারবে। বর্তমানে বাজারে সর্বনিম্ম চালের মূল্য ৫০ টাকা কেজি যা ওএমএস এর দোকানে বা ট্রাকে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা করে। আর আটার দাম বাজারের দোকানে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ওএমএস এর দোকানে ও ট্রাকে আটা বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৭ টাকায়। সরকারের পক্ষ থেকে নিম্ম ও নিম্ম মধ্য আয়ের মানুষের জন্য বিশাল অংকের ভর্তূকী।
কিন্তু দুঃক্ষের বিষয় সরকারের এত বড় ভর্তূকী যাদের জন্য তারা তার অর্ধেক পেলেও অর্ধেক খেয়ে ফেলে ডিলার, তদারককারী কর্মকর্তা, ৯ জন এ আর ও ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধানে ওএমএস দোকান ও ট্রাক থেকে চাল ও আটা কিনতে আসা দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষদের কাছে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া যায়। তারমধ্যে ট্রাক দেড়িতে আসা, আটা দিলেও চাল না দেওয়া, ধীরে ও অতি মন্থর গতিতে চাল-আটা দেওয়া, সাড়ে তিনটা থেকে শুরু করে পাচঁটা বাজার আগেই ট্রাক চলে যাওয়া, দোকানে চাল আটা থাকার পরও চাল আটা নেই বলে বিদায় করে দেওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া একজনের বৃদ্ধাঙ্গুলী ধরে একাধিক টিপসই নেওয়া, লাইনে দাড়িয়ে থাকা মহিলা ও বৃদ্ধদের না দিয়ে পরিচিতজনদেরকে আগে দেওয়া।
প্রতিটি তদারককারি কর্মকর্তারা ডিলারদের কাছ থেকে প্রতিদিন উৎকোচ নেন এই অভিযোগ এখন নিত্য-দিনের। ডিলারের বিক্রি শুরুর স্টক খাতায় এবং বিক্রয় শেষের স্টক খাতায় এই তদারককারি কর্মকর্তাই স্বাক্ষর করেন। ট্রাকের ও দোকানের চাল আটার স্টক তিনিই দেখেন। সকাল বিকেলের স্বাক্ষর এক সাথেই করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই দিন শেষে স্টক শুন্য দেখিয়ে স্টক খাতায় স্বাক্ষর করেন তদারককারি কর্মকর্তারা্। যদিও সবচেয়ে বড় অভিযোগ ডিলাররা অর্ধেক মাল গরিবের কাছে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করেন আর বাকী অর্ধেক মাল বস্তা পাল্টিয়ে বেশি দামে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন।
তদারককারি কর্মকর্তাদের উপরের অফিসার ৯ জন এআরও। ডিলাররা তাদেরকে প্রতিদিন একটি খরচ দেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। যা ডিলারদের ভাষায় ওপেন সিক্রেট সেখানে তাদেরকে দরকষাকষিও করতে হয় বলে কেউ কেউ দুঃখ প্রকাশ করেন। রোস্টারে নিয়মিত নিজের বরাদ্ধ পাওয়া নিশ্চিত করতে এআরও দেরকে আরো বেশি খুশী করতে হয়।