বাংলাকে বিচার বিভাগের দাপ্তরিক ভাষা করার দাবী মুক্তিজোটের

প্রকাশিত: 5:18 am, February 22, 2025 | আপডেট: 5:18 am,

বাংলাকে বিচার বিভাগের দাপ্তরিক ভাষা করার দাবী মুক্তিজোটের

‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চাই’। মহান ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছর পার হলেও বাংলা ভাষার স্বীকৃতি মেলেনি স্বাধীন বাংলাদেশের অনেক ক্ষেত্রে। একুশের প্রথম প্রহরে এটাই ছিল এক বিরাট আক্ষেপ।

এই আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) এর সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না। আজ ২১শের ভোরে শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এমন আক্ষেপ করেন।

এছাড়াও সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (প্রচার) মোঃ মামুন সিকদার স্বাক্ষরিত প্রেসনোটে বলা হয়- মানুষের মুখের ভাষা- আপন ভাষা রক্ষার সংগ্রামের পরিণতিতেই এদেশের স্বাধীনতা এসেছিল কিন্তু স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরেও আদালতের দাপ্তরিক ভাষা বাংলা হয়নি। অথচ, বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করছি।

এদিকে সরকার সর্বস্তরে (আন্তর্জাতিকতার শর্ত ব্যতিরেকে) বাংলা ভাষা চালু করার ক্ষেত্রে কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বা প্রতিষ্ঠানসমূহকে বাধ্য করছে না- এই মর্মে হাইকোর্ট বিভাগ এর বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসাইন এর বেঞ্চ থেকে ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে একটি রুল জারি করে।
কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্য খোদ আদালতের দাপ্তরিক ক্ষেত্রই অদ্যাবধি এই নির্দেশের বাইরে আছে! বিচার বিভাগ কি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠান? বিচার বিভাগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটা প্রতিষ্ঠান মাত্র। স্বাধীন হলেও প্রাতিষ্ঠানিক এই পরিচয়ের বাইরে তার কোনো আলাদা পরিচয় নেই।
বিচার বিভাগের দাপ্তরিক ভাষা বাংলা করার ক্ষেত্রে শিক্ষাসহ যে আনুষঙ্গিক শর্ত রয়েছে সেই ব্যাপক কর্মসীমানা বিচার বিভাগের থাকে না। রাষ্ট্র-কাঠামোর কোনো বিভাগই এককভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় আর সেটা হয়ও না, হলে সে সরকার হয়ে ওঠে- কারণ সরকারই কেবল সব বিভাগের সমন্বিত ক্রিয়ায় সর্বোচ্চ কর্তৃত্বে আসীন থাকে।

এক্ষেত্রে কথিত ‘টেকনিক্যাল সমস্যা’ বা পরিভাষাসহ বহুবিধ অজুহাতে কাল বিলম্ব মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় কারণ এমন অজুহাতেই স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পেরিয়ে গেছে এবং যতোদিন ব্যবহার-বিধি বাধ্যতামূলক না হচ্ছে এই অজুহাতে আরও ১০০ বছর পেরিয়ে গেলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।

ছত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী মহান একুশে ফেব্রুয়ারিতে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ ও তার গণতান্ত্রিক বিনির্মাণের প্রত্যাশা সত্য হয়ে উঠুক- শহীদ বেদিতে দ্রোহী শোকের স্মারকে রাখা ফুলগুলো সৃজনের মহামন্ত্রে বৈশ্বিক বার্তা হয়ে ফিরুক, আধুনিক বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৫২ থেকে ২৪ সব শহিদানের অস্তিত্ব জানান দিক তাঁরা ছিল, আছে এবং থাকবে।

মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্নার নেতৃত্বে সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজামাল আমিরুলসহ পুষ্পমাল্য অর্পণের সময়, সহ-সভাপতি মোঃ আমানউল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শরীফ মোঃ বেদুইন হায়দার লিও, উত্তম কুমার, আক্তার হোসেন মোল্লা, মোঃ মামুন সিকদারসহ যুব মুক্তিজোট-এর আহ্বায়ক মোঃ আব্দুল আউয়াল, শ্রমিক মুক্তিজোটের আহ্বায়ক- মোঃ রাশেদুল ইসলাম খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায় ফারুক মিয়া তালুকদার এছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটি, মহানগর ও বন্ধু সংগঠনসমুহের নেতা-কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



একটি মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা আছে *