আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ
খন্দকার ছদরুজ্জামান, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার একটি আঞ্চলিক সড়কে নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, নামেই শুধু রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। বাস্তবে কাজের নিয়ম মানছে না ঠিকাদার। কাজে ব্যবহার করছেন নিম্নমানের সামগ্রী। এলাকাবাসী বাধা প্রদান করলে তাদেরকে হামলা- মামলার হুমকি দিচ্ছে ঠিকাদারের লোকজন। এ বিষয়ে এলাকাবাসী সরেজমিনে থাকা এলজিইডি অফিসের ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট মো: কাইয়ুম কে রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কেন কাজ হচ্ছে? এ কথা বললে তখন ঠিকাদারের লোকজন এসে প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে কাইয়ুম সাহেব কে বলে তোকে ২০ হাজার টাকা কেন দিলাম। তুই এলজিইডি অফিসের লোক অফিস ম্যানেজ করবি। এবং এইখানে তোর বাড়ি তোর লোকজনদের ম্যানেজ করবি। এখন তোর লোকজনকে সরে যেতে বলিস না কেন?তখন কাইয়ুম সাহেব ঠিকাদারের লোকজনদের কিছু না বলে, এলাকাবাসীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে সরিয়ে দেন ।
নড়াইলের লোহাগড়ায় এলজিইডি/এন আর এল/ভি আর আর পি/ ও এল/২২-২৩/ডাবলু -২৭ এর অধীনে সড়কটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ১০ লক্ষ ৯ হাজার ১শ ৩৭ টাকা। কাজটির টেন্ডার হয়েছে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শুরু করেছে ০৪-০৬-২৩ তারিখে ৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি শেষ করতে পারেনি চলমান রয়েছে এখনো। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করাতে ভোগান্তিতে এলাবাসী। তবে ক্যামেরার সামনে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চরশালনগর গ্রামের আপিলগেট বাজার থেকে আঞ্চলিক-গ্রামীণ সড়কে ৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলছে। ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের উপকরণ। বিরক্ত এলাবাকাসী। রাস্তার কাজ নামে চলছে নয়ছই অবস্থা। দেরিতে কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার। সড়কের মূল ঠিকাদার হিসেবে কাজ পেয়েছেন মেসার্স বাহার এন্টারপ্রাইজ। স্থানীয়দের ভাষ্য সড়ক বিভাগ সঠিকভাবে তদারকি না করাই সড়কের এমন হাল। তড়িঘড়ি করে এগোচ্ছে সব কাজ। তাই টিকসই হচ্ছে না সড়কটি। ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের পুরনো ইটের টুকরো।
রাস্তাটির কাজের বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি খনন করে রাখা হয়েছিল। যার ফলে আমাদের চলাচল করতে অনেক অসুবিধা হয়। তবে নিম্নমানের আগের রাস্তার পুরনো ইট দিয়ে রাস্তার কাজ করছে। এতে করে রাস্তাটি বেশি দিন টিকসই হবে না।
শালনগর ইউনিয়রে চেয়ারম্যান লাবু মিয়া জানান, কাজের মান নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন খারাপ মন্তব্য করছেন। আমি নিজেও রাস্তার কাজটি পরিদর্শন করে দেখেছি। তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে।ওই রাস্তার পাশেই আরেকটি রাস্তাও কাজ চলমান রয়েছে সেটারও অবস্থা খুবই নিম্নমানের। এতে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি খুন্ন হয়েছে। কর্তৃপক্ষ রাস্তাটির বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন এমটাই চাওয়া এই স্থানীয় জনপ্রতিনিধির।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আজগর আলী জানান, রাস্তাটির কাজের অনিয়মের কথা ফোনে অনেকেই জানিয়েছেন। আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি অবগত করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।