দিনাজপুরের ‘প্রথম’ মসজিদ চেহেলগাজী

প্রকাশিত: ৭:০৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২৩ | আপডেট: ৭:০৮ অপরাহ্ণ,

মোঃ হাফিজুল ইসলাম শান্ত: দিনাজপুরের ‘প্রথম’ মসজিদ চেহেলগাজী দিনাজপুরের ৫৬৩ বছরের একটি প্রাচীন নিদর্শন চেহেলগাজী মসজিদ। ধারণা করা হয়, সুলতান রুকনুদ্দীন বারবক শাহর রাজত্বকালে (১৪৬০-১৪৭৪ সাল) বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার নির্মিত এটিই প্রথম মসজিদ। এটির পূর্বপাশে রয়েছে চেহেলগাজী মাজার।

 

তবে প্রাচীন এই মসজিদটির নাম পুরাকীর্তি হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাতে নেই। স্থানীয় সচেতন মহল এটিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকায় স্থান দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

 

দিনাজপুর সদর উপজেলার চেহেলগাজী গ্রামে মসজিদটি অবস্থিত। জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় সাত কিলোমিটার উত্তরে। মসজিদের কালনির্দেশক তিনটি শিলালিপি ছিল। এর একটি দিনাজপুর জাদুঘরে ও দুটি জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।

 

এ শিলালিপি থেকে জানা যায়, ৮৬৫ হিজরির ১৬ সফর (১৪৬০ সালের ১ ডিসেম্বর) মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। সুলতান রুকনুদ্দীন বারবক শাহর রাজত্বকালে তার উজির ইকরার খানের নির্দেশে তৎকালীন পূর্ণিয়া জেলার অন্তর্গত জোর ও বারুর পরগনার শাসনকর্তা উলুঘ নুসরত খান বৃহত্তর দিনাজপুরে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।

 

বর্তমানে মসজিদটির দেওয়াল ছাড়া আর কোনো অংশ অবশিষ্ট নেই। দেওয়ালগুলোও ভগ্নপ্রায়। দেওয়ালে কোনো অলঙ্করণ দেখা যায় না। তবে মেহরাবের কাছে কিছু পোড়ামাটির ফলক এখনো বর্তমান। এগুলোর বেশিরভাগই খুলে পড়ছে।

 

বর্গাকার মসজিদটির মূল কক্ষের ওপর একটি এবং পূর্বদিকের বারান্দার ওপর সম্ভবত তিনটি গম্বুজ ছিল। মসজিদের স্থাপত্য পরিকল্পনার এ রীতি মোগল যুগ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

 

বাইরের দিকে মসজিদের মূলকক্ষের আয়তন ৪ দশমিক ৯০ মিটার। মূলকক্ষের পূর্বদিকে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে দুটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ আছে। পূর্বদিকের তিনটি প্রবেশপথের মধ্যে মাঝের খিলানের উচ্চতা ২ দশমিক ৬০ মিটার এবং প্রস্থ শূন্য দশমিক ৭৭ মিটার।

 

পূর্বদিকের বারান্দার দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৯০ মিটার এবং প্রস্থ ১ দশমিক ৮৩ মিটার। বারান্দায় প্রবেশের জন্য মূলকক্ষের পূর্বদিকের অনুরূপ আয়তনবিশিষ্ট তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে। মসজিদের ভেতরে পশ্চিমদিকে রয়েছে তিনটি মেহরাব। মাঝের মেহরাবটি পাশের দুটির তুলনায় একটু বড়। মেহরাবগুলো বহুপত্র খিলানবিশিষ্ট। মেহরাবের অলঙ্করণে পাথর দেখা যায়। পাথর ও পোড়ামাটির ফলক দিয়ে এ মেহরাবগুলো সুন্দরভাবে অলঙ্কৃত। পোড়ামাটির ফলকগুলোর মধ্যে ফুল, লতাপাতা ও ঝুলন্ত মোটিফ লক্ষণীয়।



একটি মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা আছে *