নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর দেশের মানুষের আস্থা নেই — গোলাম মোহাম্মদ কাদের
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর দেশের মানুষের আস্থা নেই। বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি আওয়ামী লীগের এক মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেছেন তিনি কত শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হবেন। পাশাপাশি কোন প্রার্থী কত ভোট পাবেন তিনিও সেটি বলে বেড়াচ্ছেন। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে। আমরা জয়ী হতেই নির্বাচন করবো। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সিটি নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীরা ভালো ফলাফল করবেন।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং পার্টির সংসদ সদস্যদের এক যৌথ সভায় সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এ কথা বলেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, কুটনৈতিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী কুটনৈতিকদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই। কুটনৈতিকরা যেনো আমাদের দেশে নিরাপদে কাজ করতে পারেন। এজন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি হযবরল হতে পারে। রাজনীতির মাঠে কি হয় আমরা কেউই জানি না। এমন বাস্তবতায় সরকার ও বিরোধী শিবিরের সবাই ঝুঁকিতে আছেন। তাই রাজনীতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যে দল সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না তারাই বিপদগ্রস্ত হবে। রাজনীতিতে ভুল সিদ্ধান্ত নিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে। তিনি বলেন, জনগণের সামনে আমাদের রাজনীতি পরিস্কার করতে চাই। আমরা কোন দলের বি-টিম নয়। নির্বাচনের আগে দলকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য সঠিক রাজনীতি দিতে হবে। নির্বাচনের মাঠে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে থাকবো। জাতীয় পার্টির ঐক্য বিনষ্ট করার শক্তি কারো নেই।
এসময় জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি বলেন, দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থেকেও জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে বিকল্প শক্তি হিসেবে আছে। অনেকেই বলেছেন, এরশাদের মৃত্যুর পরে জাতীয় পার্টি বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু জাতীয় পার্টি এখনো অনেক শক্তিশালী। তিনি বলেন, ইন্ধন আছে কিন্তু সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অনেকেই জাতীয় পার্টি থেকে বের হয়ে গেছেন, তারা কেউই কিছু করতে পারেন নি। আমাদের জীবনের সোনালী সময়টা জাতীয় পার্টিকে দিয়েছি, বাকি জীবনেও জাতীয় পার্টির সাথেই থাকবো।
পার্টির মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, দেশের মানুষ এখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিয়ে ভাবছে না। দেশের মানুষ চায় জাতীয় পাার্টি যেনো আরো শক্তিশালী ভাবে রাজনীতির মাঠে থাকে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনীতির মাঠে থাকলে দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকেই সমর্থন দেবে।
কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করবে। দেশের মানুষ জানে, ঐক্যই আমাদের অঙ্গীকার। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে পরিক্ষিত, পরিপক্ক এবং ত্যাগী নেতার অভাব নেই। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাবো।
কো-চেয়াম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেছেন, ঐক্যের বিকল্প নেই। জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনীতির মাঠে আছে। কোন বিভক্তি নেই জাতীয় পার্টিতে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আমাদের সাথে অবিচার করা হয়েছিলো। ঐ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমান সুযোগ পেলে দেশের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো।
কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ওপর বিরক্ত। তারা এই দুটি দলকে আর চায় না। তাই যার যার নির্বাচনী এলাকায় শক্তভাবে কাজ করতে হবে। শক্তভাবে রাজনীতির হাল ধরতে সবার প্রতি আহবান জানান তিনি।
বনানীস্থ কার্যালয়ের মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি’র সভাপতিত্বে প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পাটির উক্ত যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র কো- চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, জাতীয় পার্টি মহাসচিব- মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য- মো: আবুল কাশেম, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, আলহাজ্ব সাহিদুর রহমান টেপা, এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম এমপি, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সুনীল শুভরায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, সোলায়মান আলম শেঠ, আব্দুর রশিদ সরকার, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, লে: জে: (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বক্স, নাজমা আখতার এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রওশন আরা মান্নান, শেরীফা কাদের, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, নুরুল ইসলাম তালুকদার, আহসান আদেলুর রহমান।