ফরিদপুরে ওষুধ সমিতির সিন্ডিকেটের নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ রোগী

প্রকাশিত: ৯:১৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২৩ | আপডেট: ৯:১৭ অপরাহ্ণ,

ফরিদপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  ঃ

প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা এবং ক্রয় করতে হচ্ছে নানা ধরণের ওষুধ। এই ওষুধ ক্রয়ে গুনতে হচ্ছে অনেক টাকা। এমন অনেক ওষুধ রয়েছে যা ক্রয় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত্ব আয়ের লোকজনের। সেখানে নি¤œ আয়ের মানুষ তো একদম হোচট খেয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় সাড়া দেশে ওষুধ বিক্রি হয় ৫-১০% ডিসকাউন্টে, যেন কিছুটা হলেও মানুষ সুবিধা পায়। ফরিদপুরেও একই নিয়ম চলছিলো। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে ফরিদপুর ওষুধ সমিতি নতুন নিয়ম চালু করেছে। তারা সরকার কর্তৃক নির্ধারতি মূলে ওষুধ বিক্রি করার নাম করে দোকানে দোকানে লিফলেট টানিয়েছে। কোথাও কোথাও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামও রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে সবচেয়ে বেশি কষ্টের সম্মুখীন হয়েছে গরীব রোগী। নিলয় পোদ্দার নামে এক ভুক্তভোগী গ্লোবাল নিউজ বিডি২৪.কমকে জানান, আমরা ফরিদপুরবাসী অসহ্য হয়ে যাচ্ছি এইসব কারণে আমাদের ফরিদপুরে এখন আর কোন ওষুধের দোকানে ৫%-১০% ডিসকাউন্ট দেয়া হয় না। আমার নিজের পরিবারের জন্য প্রতিমাসে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার ঔষধ লাগে বাবা মার জন্য। তারপর প্রত্যেকটা ওষুধের দোকানদার আমাদের কাছে ঔষধের সঠিক দামটাও বলে না কারণ ওষুধের পাতার গায়ে ওষুধের সঠিক দাম লেখা থাকে না। তাহলে আমরা কিভাবে বুঝতে পারবো এই টাই ওষুধের অরিজিনাল দাম দোকানদার যা বলতেছে আমরা তাই বিশ্বাস করতেছি। প্রতি পাতা ওষুধের ১০ টাকা ২০ টাকা বেড়ে গেছে। এটা কি বাংলাদেশ সরকার বাড়িয়েছে না ওধুধ সমিতির সিন্ডিকেট? ফরিদপুরের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এই বিষয়টা দেখার জন্য অনুরোধ করা হলো। আপনারা যদি আমাদের মতো সাধারন মানুষের পাশে না দাঁড়ান তাহলে আমরা তো মরে যাব। গরিব মানুষ ঠিকমতো শুধু খেতে পারছে না।

ওষুধ সমিতির নিয়ম ভঙ্গ করে কেউ যদি ৫-১০% ডিসকাউন্ডে ওষুধ বিক্রি করে তাহলে সেই ব্যবসায়ীকে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের জরিমানা, যা এই ওষুধ সমিতির সিন্ডিকেটের পকেটে যাচ্ছে। ফলে ওষুধ ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়ে গেছে। ফরিদপুরে কানাইপুরের মতি মেডিকেল হলের সত্ত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম চঞ্চল ওধুধ সমিতির সভাপতি হওয়ার পর থেকে এই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যপক তোলপাড়া শুরু হয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এর প্রতিবাদও শুরু করেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের একজন কর্মী স্বেচ্ছাসেবী খায়রুল ইসলাম রোমান বলেন, সাড়া দেশে ওষুধ বিক্রি হয় ৫-১০% ডিসকাউন্ডে। কিন্তু ফরিদপুরে যে ওষুধ সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন তারা এর উল্টোদিকে অবস্থান করছেন। কোন ব্যবসায়ী যদি রোগীর নিকট ৫-১০% ডিসকাউন্ডে ওষুধ বিক্রি করেন তাহলে ওষুধ সমিতি তাদেরকে মোটা অংকের জরিমানা করেন। এ নিয়মটা শুধুমাত্র ফরিদপুরে চলছে, পাশের জেলাগুলোতে এ নিয়ম চলছে না, সেখানে ৫-১০% ডিসকাউন্ডে ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী খায়রুল ইসলাম রোমান আরও বলেন, ফরিদপুরে রোগীরে বেশির ভাগই গরীব ও অসহায়। এ জেলায় প্রতিদিন গড়ে ৩ কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। ৫-১০% ডিসকাউন্ডে ওষুধ বিক্রি করলে প্রতিদিন ১৫-৩০লক্ষ টাকা গরীব ও অসহায় রোগীরে বেঁচে যায়। অথচ এই টাকা ওষুধ সিন্ডিকেটের পকেটে চলে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে গরীব ও অসহায় রোগী ঠিক মত ওষুধ ক্রয় করতে পারবে না। এ বিষয়ে তিনি প্রত্যেকটি স্বেচ্ছাসেবী ও মানবাধিকার সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। প্রয়োজনে ফরিদপুরের রাজ পথে নামবেন বলে ঘোষানা দিয়েছেন।

আরও একজন স্বেচ্ছাসেবী কর্মী ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ পারভেজ গ্লোবাল নিউজ বিডি২৪.কমকে জানান, ওষুধ সমিটির সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি এবং অনেক সাড়াও পেয়েছি। ফরিদপুর জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যদি প্রশাসনিকভাবে কোন সাড়া নাই পাই তাহলে অচিরেই আমরা গরীব ও অসহায় মানুষের পক্ষে ওষুধ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের রাজ পথে নামবো।



একটি মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা আছে *