মহাণ মে দিবসে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ৭ দফা ঘোষনা
নিজস্ব প্রতিবেদক: মহান শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক মুক্তিজোট আয়োজিত আলোচনা সভায় মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না শ্রমিকদের জীবন মান উান্নয়নে ৭ দফার ঘোষণা করেন।
“শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি স্থানীয় সরকার ভিত্তিক জাতীয় সরকার গড়ে তুলি” এই স্লোগানে ১লা মে বাংলাদেশ কৃাষক মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মোঃ তরিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় কৃষক মুক্তিজোটের সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির আলোচনায় মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান- আবু লায়েস মুন্না ৭ দফার কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি- মোঃ আমানউল্লাহ আমান ও মোঃ রাসেল কবির, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাহেল আহম্মেদ সোহেল ছাড়াও মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য- মোঃ মিনহাজুল ইসলাম ও শরীফ মোঃ বেদুইন হায়দার লিওসহ কৃষক মুক্তিজোট ও মুক্তিজোটের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আবু লায়েস মুন্না আরও বলেন- প্রতি বছর ২০/২২ লাখ তরুণের মাত্র দুই লাখের মতো কর্মসংস্থান রাষ্ট্র করতে পারে। কয়েক লাখ লোক পাড়ি জমায় বিদেশে। আর বাকিরা দেশে কোনোমতে কাজ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের দেশের ৬ কোটি ৩৪ লাখ শ্রমজীবীর ৩ কোটি কৃষিখাতে, ৫০ লাখ শ্রমিক গার্মেন্টসে, ৩০ লাখের বেশি নির্মাণ খাতে; ৫০ লাখ পরিবহন খাতে; ১০ লাখের বেশি লোক বিভিন্ন শ্রমে নিয়োজিত বিভিন্ন সুত্র জানা যায়। এসকল শ্রমিকদের জীবন-মান উন্নয়নে মুক্তিজোট কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধান আলোচোকের আলোচনায় মুক্তিজোটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজামাল আমিরুল তাঁর লিখিত বক্তব্য বলেন শুধু প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সময়ই না বর্তমানে চলমান প্রচন্ড তাপ দাহের মধ্যেও শ্রমিকদের পেটের দায়ে লু হাওয়াকে মাথায় নিয়ে কাজের উদ্দেশ্য বের হতে হচ্ছে। তাই আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে শ্রমিকদের জীবন-মান উন্নয়নে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের পক্ষ থেকে তিনি সরকারের কাছে নিম্নোক্ত ৭ দফা দাবী জানান। দাবী গুলো হল-
১. কৃষক-শ্রমিক-প্রবাসীদের জন্য শর্ত ছাড়া বীমা ব্যবস্থা চালু করা এবং তাদের ন্যায্য সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।
২. চা ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন ভাতা ও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে অন্যান্য পেশাজীবীদের সাথে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে হবে।
৩. রিক্সাসহ যে কোন শ্রমিকদের আধুনিক ও পরিবেশ বান্ধব যান্ত্রিক যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. বাজারদর ও একক পরিবারের জীবনমান বিবেচনায় শ্রমিকের নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করতে হবে।
৫. বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য বেকার ভাতা প্রচলন করা এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।
৬. মানুষকে মানবসম্পদে পরিণতকরার লক্ষ্যে সকল ধরণের দক্ষতা উন্নয়নে উপজেলাভিত্তিক প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ শ্রমিক তৈরী করতে হবে।
৭. সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারীদের শ্রম ঘন্টা সমন্বয় করে দিনে ৮ ঘন্টা শ্রম নির্দিষ্ট করতে হবে।
বিশেষ অতিথি বৃন্দের বক্তব্য – দিবসটির প্রধান দাবি ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হলেও কেন বেসরকারি খাতে এখনও ৮ ঘণ্টা কর্ম দিবসের সুফল পায়নি। নিম্ন মজুরির ফাঁদে শ্রমজীবী মানুষকে আটকে ফেলা হয়েছে। শ্রমিকরা এখন বাধ্য হয় ওভার টাইম করতে। কারণ তা না করলে সংসার চালানো অসম্ভব এসকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ কৃষক মুক্তিজোটের সভাপতি সভার সমাপনী বক্তব্য শ্রমিকদের জীবন-মান উন্নয়কে গুরুত্বদিয়ে বলেন যেহেতু শ্রমিকদের রক্ত ঘামে গড়ে উঠেছে সভ্যতা তাই শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।