১০ বছর পর বদলে যেতে পারে সাংবাদিকতা
লিটন হাওলাদার: সাংবাদিকতায় চ্যালেঞ্জের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিকরা।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলা একাডেমির লনে ‘চাপের মুখে সাংবাদিকতা’ শিরোনামে সেশনে আলোচনা করেন তারা।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক তানিম কবিরের সঞ্চালনায় এ আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মহসীন হাবিব৷
আলোচনায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, নতুন একটি বিষয় মিডিয়া লিটারেসি৷ পত্রিকা বা টিভিতে প্রকাশিত সংবাদ কোনটি পাঠক বিশ্বাসযোগ্য বলে ধরে নেবে, সেই জায়গায় কিন্তু আমাদের ঘাটতি রয়ে গেছে৷ সেটিও একটি চাপ৷
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে শ্যামল দত্ত বলেন, এ আইন নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছি। প্রেসক্লাব, সম্পাদক পরিষদ বা অন্য কোনো সংগঠন বড় কথা না।
কে কী রোল প্লে করলো সেটাই বড় কথা। সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্চ প্রসঙ্গে শ্যামল দত্ত বলেন, চ্যালেঞ্জের নানা রকম চেহারা আমাদের সামনে বিদ্যমান।
বিপ্লব এসেছে বিশ্ব জুড়ে, সেটা হচ্ছে মোবাইল টেকনোলজি। চাপ বহুজাতিক কোম্পানি থেকেও আছে। আমাদের অনেক ধরনের প্রত্যাশা আছে। মুক্তিযুদ্ধ, এ জায়গায় আমাদের ফিরতে হবে। এ চেতনায় ফিরলেই আমরা জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারবো।
মফস্বল সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল বলেন, মফস্বলে যারা সাংবাদিকতা করেন, তারা অনেক বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী সবার হুমকিকে মোকাবিলা করে তাদের সাংবাদিকতা করতে হয়। মামলার ঝুঁকি কোনও ঝুঁকি না, কিন্তু হামলা, জীবনের ঝুঁকি তাদের মোকাবিলা করতে হয়।
সাংবাদিকতা যখনই চাপে পড়েছে, তখনই বিকশিত হয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি বলেন, সেই বিশ্ব গেজেট থেকে শুরু করে আগামী ৮ জানুয়ারি আমার পত্রিকা প্রতিদিনের বাংলাদেশ প্রকাশ পর্যন্ত সাংবাদিকতাকে নানামুখী চাপের মুখে পড়তে হয়েছে৷ সাংবাদিকতা হলো নেশা, এ নেশা ছাড়া তো সাংবাদিকতা হয় না।
মুস্তাফিজ শফি বলেন, দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান শক্তির পার্থক্য রয়েছে৷ দৃশ্যমান শক্তিকে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি, মামলা হোক, জেলে যেতে রাজি আছি৷ তবে অদৃশ্য শক্তির কারণে সাংবাদিকদের জীবন হুমকির মুখে৷ সে জায়গা থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমাজকে সহনশীল করতে হবে। সমাজে সাংস্কৃতিক জাগরণ দরকার।
প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগেও প্রিন্ট ভার্সনের পত্রিকা হারিয়ে যাবে না বলে মন্তব্য করেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক।
মুস্তাফিজ শফি বলেন, ১০ বছর পর প্রিন্ট পত্রিকা থাকবে কি থাকবে না- তা নিয়ে নয়, আমি চিন্তা করছি ১০ বছর পর সাংবাদিকতা কীভাবে থাকবে৷ পত্রিকা যেভাবেই প্রকাশিত হোক, মানুষকে যদি সঠিক ও ভুল সংবাদের পার্থক্য বোঝাতে পারি, তবে সেই সংবাদ জেনে তারা উপকৃত হবেন। অনলাইন পত্রিকার ভিত্তি হলো প্রিন্ট পত্রিকা। বাংলাদেশে পরিবর্তন আসবে নতুন প্রজন্মের হাত ধরে।