ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতের ইশারায় ছুটে গেলেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
হিমেল মিএ: রংপুরে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে এসেছিলেন ৯৫ বছর বয়সী ভাষাসৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মজিবর রহমান মাস্টার। কিন্তু কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ ছিল না তার। সে জন্য স্টেজের দূর থেকে হাতে ইশারা দেন। রংপুরের পুত্রবধু, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য জৈষ্ঠ্য কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা দেখতে পেয়ে দ্রুত ছুটে যান তার কাছে। খোঁজখবর নেন ভাষাসৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মজিবর রহমান মাস্টারের।
রংপুরের পুত্রবধু, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য জৈষ্ঠ্য কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত মজিবর রহমান বলেন, ‘এটাই শেখের বেটি।’ হাত বুলিয়ে দেন সরকারপ্রধানের মাথায়। মমতাময়ী শেখ হাসিনাও ঠিক একইভাবে হাত ভুলিয়ে দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবরের মাথায়।
প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যতায় আপ্লুত মজিবর রহমান মন খুলে দোয়া করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে। সৃষ্টি হয় শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভালোবাসার এক অনন্য নজির।
রংপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে মহাসমাবেশে এসেছিলেন বলে জানান তিনি।
মজিবর রহমান জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো কষ্ট নেই। জনসভা সফল করতে এসেছেন হুইলচেয়ারে বসে। রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় তার বাড়ি। তিনি আওয়ামী লীগের বদরগঞ্জ উপজেলার সাবেক সভাপতি।
সমাবেশ শেষে কথা হয় ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মজিবর রহমানের সঙ্গে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল। মিজানুর রহমান তুহিন, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জেলা শাখা।
রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রনি।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে ৬ নম্বর সেক্টর থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে তার নামে ওয়ারেন্ট হয়েছিল। ১৯৭১ সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পর মজিবর রহমান বদরগঞ্জে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। তিনি ওই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। আহ্বায়ক ছিলেন এমএলএ এলাহী বকস্ সরকার। পরবর্তী সময়ে তাকে শ্যামপুর আঞ্চলিক সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক করা হয়েছিল।
মজিবর রহমান ১৯৬৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বদরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাকশাল গঠনের পর তিনি দীর্ঘদিন রংপুর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বদরগঞ্জ শাখা টিসিসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি বদরগঞ্জের কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন।
মজিবর রহমান মাস্টার স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও যুদ্ধাপরাধী এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলায় সাক্ষী ছিলেন। তাকে বহুবার হুমকি দেয়া হয়েছিল। তা উপেক্ষা করেই তিনি সাক্ষ্য দেন। এ কারণে তিনি জামায়াত-শিবিরের হামলার শিকারও হন।