বঙ্গবাজারের আগুনে মুহূর্তে সব হারিয়ে দিশেহারা ব্যবসায়ী
হীমেল কুমার মিত্র
স্টাফ রিপোর্টারঃ
বঙ্গবাজারের আগুনে মুহূর্তে সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী সাইদুল। এখন পরিবার নিয়ে পথে বসে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী সাইদুল।
সাইদুল ইসলাম জানান, কীভাবে আগুন লাগছে, আমরাও বলতে পারব না। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। গত দুদিনে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার মাল উঠেছে আমার দোকানে।
‘সরকার যদি আমাদের সহায়তা না দেয়, আমরা পথে বসে যাব। এখন সংসার চালানো আমাদের জন্য কষ্ট হয়ে যাবে,কাঁদতে কাঁদতে বলেন ব্যবসায়ী সাইদুল।
ঈদ বাজার সামনে রেখে দোকানে ৯৫ লাখ টাকার মাল তুলেছিলেন বলে দাবি করেন ব্যবসায়ী সাইদুল।
বঙ্গবাজারের ৫টি মার্কেটে সাড়ে ৫ হাজার দোকান ও গোডাউন আছে বলে জানান ব্যবসায়ী সাইদুল।
ওখানে দোকান মালিক আছেন ৩ থেকে ৪ হাজার।
পঞ্চাশ বছর বয়সী ব্যবসায়ী সাইদুল জানান, আগুনে ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ভোর ৬টায় আগুন লাগার খবর শুনে তিনি বঙ্গবাজার আসেন। কিন্তু নিজের কিছুই রক্ষা করতে পারেননি।
মার্কেটের পেছনে প্রতিবেদকের সঙ্গে তার দেখা হয়। তিনি জানান, এখানে কোনো গ্যাসের লাইন ছিল কিনা জানি না। ১ ছেলে ২ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে থাকেন তিনি। সংসার চালাতে এই দোকানই ছিল তার একমাত্র ভরসা।
আল-আমিন নামের আরেক ব্যবসায়ী জানান, ‘সম্প্রতি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ৪০ লাখ টাকার মাল তুলেছি। একেকটা শাড়ির দাম সাত থেকে আট হাজার করে। সর্বনিম্ন তিন হাজার। কিন্তু সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ভয়াবহ আগুন লাগে বঙ্গবাজার মার্কেটে।
সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
তিনি জানান, বাতাসের জন্য আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট কাজ করে। বঙ্গবাজারের টিনশেড দোতলা মার্কেট পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এরই মধ্যে ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে দেখা দেয় পানির সংকট। আগুন নেভাতে হাতিরঝিল থেকে পানি আনা হচ্ছে। আগুন নেভাতে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে ওপর থেকে পানি ছিটানো হয়। এদিকে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকেও যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট।