কম্পিউটার সমিতিতে প্রশাসক নিয়োগ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের সবচেয়ে পুরোনো সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিতে (বিসিএস) নতুন প্রশাসক বসিয়েছে সরকার। প্রশাসক হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাহিদ আফরোজকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি অনুবিভাগের রপ্তানি-১ অধিশাখায় কর্মরত। আজ বুধবার বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ থেকে প্রশাসক নিয়োগের এই অফিস আদেশ জারি করা হয়।
বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক নাজনীন কাউসার চৌধুরীর সই করা আদেশে বাণিজ্য বিধি অনুযায়ী, প্রশাসককে দায়িত্ব গ্রহণের ১২০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিসিএসের পরবর্তী নির্বাহী কমিটি (ইসি) গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অফিস আদেশে কারণ হিসেবে বিসিএসের ২০২৪-২৬ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্যের পদত্যাগের কথা বলা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২-এর ১৭ ধারা মোতাবেক সরকারের অনুমোদনক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম নাহিদ আফরোজকে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রশাসক নিয়োগ করা হলো। তিনি ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে এই মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০ আগস্ট বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) কার্যনির্বাহী কমিটির সব একযোগে পদত্যাগ করেন। এরপর ২ সেপ্টেম্বর এক তলবি সভার মাধ্যমে স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামকে অন্তর্বর্তীকালীন আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়। এ সভায় বিসিএসের বেশ কয়েকজন সাবেক সভাপতিসহ সদস্যদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সমিতির এ সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য পরিচালক, বাণিজ্য সংগঠনে (ডিটিও) পাঠানো হয়। তবে ডিটিও বিষয়টি অনুমোদন করেনি। আজ সংগঠনে প্রশাসক নিয়োগের অফিস আদেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলাম। যেহেতু বিসিএসের সদস্যরা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, তাই আমি প্রশাসককে সার্বিক সহযোগিতা করব। তাঁর সঙ্গে কাজ করব।’
বিসিএসের সাবেক সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চাই না যে আমাদের বিসিএসে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হোক। যাঁদের আমরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিলাম, সংগঠন না চালাতে পারলে তাঁদের উচিত ছিল পদত্যাগ করার আগে কমিটিতে যোগ্য কয়েকজনকে ‘কো-অপ্ট’ করে নেওয়া। আমাদের গঠনতন্ত্রেও কিছু সংশোধনী আনা দরকার, সেটা করা যেত। নতুন প্রশাসক চার মাসের জন্য এসেছেন, এর পরেই ভোট। আমার অনুরোধ, নতুন প্রশাসক যেন আমাদের ভোটার তালিকাও ঠিক করে দেন। এটা কম্পিউটার ব্যবসায়ীদের সংগঠন। এখানে শুধু কম্পিউটার ব্যবসায়ীরাই থাকবেন।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল বিসিএসের ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাহী কমিটি ও ১১টি শাখা কমিটির নির্বাচন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।