জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা, দোয়া ও দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য বিতরণ

প্রকাশিত: ৯:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২৩ | আপডেট: ৯:২৭ অপরাহ্ণ,

হিমেল কুমার মিত্র, স্টাফ রিপোর্টার: শোকাবহ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির শোকের দিন। সারা দেশের ন্যায় রংপুরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে । জাতির জনককে সপরিবারে নির্মম-নিষ্ঠুরভাবে হত্যার ৪৮ বছর।

 

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে পালন করে এই দিনটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে রাজধানী ঢাকায় সংঘটিত হয়েছিল ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়। এদিন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলার রাখাল রাজা ও মহানায়ককে হত্যা করেছিল ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল।

 

আজ (১৫ই আগস্ট) মঙ্গলবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রংপুর মেট্রোপলিটন পশুরাম থানা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

 

আজ (১৫ আগস্ট ) মঙ্গলবার বাদ জোহর নগরীর ৪নং ওয়ার্ডের জলছত্র মাদীনাতুল উলুম হাফিজিয়া ও নুরানী একামেমি মাদরাসায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেট্রোপলিটন পশুরাম থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শ্রী হারাধন রায় হারা।

 

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন পশুরাম থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সদস্য আখতারুজ্জামান আখতার, জলছত্র মাদীনাতুল উলুম হাফিজিয়া ও নুরানী একামেমি মাদরাসা কমিটির সভাপতি মোঃ ফজলুল হক, যুব নেতা দিপ চরণ, মজিবর রহমান, মমতাজ উদ্দিন, রোস্তম ও আলতাফ হোসেনসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দগণ এ সময় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জলছত্র মাদীনাতুল উলুম হাফিজিয়া ও নুরানী একামেমি মাদরাসার মোহতামিম হাফেজ মাও. মোঃ তাওহিদুল ইসলাম।

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল শেষে অত্র মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন এলাকার দরিদ্র মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

 

উল্লেখ্য, বাঙালির মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব, তার চেতনা অবিনশ্বর। মুজিব আদর্শে শানিত বাংলার আকাশ-বাতাস, জল-সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চির প্রবহমান থাকবে। জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, ডিজিটাল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ।

 

সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ পালন করেছে।প্রতিবছরের ন্যায় এই দিনের মতো আজও যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী পালনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি ভাবে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

 

বঙ্গবন্ধু ছাড়াও ১৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডির বাড়িতে তার সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের,বঙ্গবন্ধুর ভাগনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনি, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তার জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়।বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং নিকটাত্মীয়সহ ২৬ জনকে ওই রাতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

 

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছাত্র অবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সংগ্রামী নেতা। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফার প্রণেতা ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত করেন। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ষাটের দশক থেকেই তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন।

 

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উত্তাল সমুদ্রে বঙ্গবন্ধু বজ্রদৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এই ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি স্বাধীনতার মূলমন্ত্র পাঠ করে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছিনিয়ে আনে দেশের স্বাধীনতা। জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পুরুষ বঙ্গবন্ধুর অমর কীর্তি এই স্বাধীন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর গোটা বিশ্বে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া।



একটি মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা আছে *